কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে গরু, ঝুঁকছেন ক্রেতারাও

রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জ এলাকার জমজম খামারে ব্যতিক্রম এ উপায়ে গরু বিক্রি হচ্ছে

নভেল চৌধুরী ♦ রংপুরে লাইভ ওয়েট বা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে কোরবানির গরু। নগরীর মাহিগঞ্জ এলাকার জমজম খামারে ব্যতিক্রম এ উপায়ে গরু বিক্রি হচ্ছে। কোরবানির হাটে দর কষাকষির যন্ত্রণা এড়াতে কেজি দরে গরু কেনার প্রতি ঝুঁকছেন ক্রেতারাও। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,  আব্দুল মতিন আজিজ তার খামারে বিভিন্ন আকারের শতাধিক দেশী, শাহিওয়াল ও নেপালী জাতের গরু রেখেছেন। তার গরুগুলো বিক্রি হচ্ছে লাইভ ওয়েট পদ্ধতিতে। খামারি আব্দুল মতিন আজিজ বলেন, গেল তিন বছর ধরে আমি গরু মোটা তাজা করে আসছি। গত বছর কোরবানি ঈদকে ঘিরে ১’শ টি গরু প্রস্তুত করেছিলাম। কেজি দর পদ্ধতিতে বিক্রি করায় ক্রেতাদের সাড়া ভালো পেয়েছিলাম, তাই সব গরু বিক্রি হয়েছিল। এজন্য এবছর ১২০টি গরু প্রস্তুত করেছি। এপর্যন্ত অর্ধেকের বেশি গরু বিক্রি হয়ে গেছে। গরু লাইভ ওয়েটের মাধ্যমে ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। আশা করছি ঈদের আগে আগেই সবগুলোই বিক্রি করতে পারব। তিনি জানান, গত বছর যে ফিড ছিল ২৫ টাকা কেজি এ বছর সেটি হয়েছে ৪০ টাকা কেজি। খৈল, ভ‚সি সবকিছুর দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। তবে গরুর দাম কেজি প্রতি বেশি বাড়ানো হয়নি, এজন্য খুব একটা লাভ হবে না এ মৌসুমে। খামারে গরু কিনতে আসা হাশেম আলী  বলেন, প্রতিবছরই এখান থেকে গরু কেনা হয়। লাইভ ওয়েটের বিক্রি হওয়ায় দর কষাকষি করতে হয় না এবং বাজেটের মধ্যে ভালো গরু পাওয়া যায়। এখানে গরু বুকিংয়ের সুবিধাও রয়েছে। ফলে গরু বাসায় রাখা নিয়েও চিন্তা করতে হয় না। সবকিছু মিলিয়ে এখানে ভালো সুযোগ-সুবিধা থাকার কারণে এখান থেকেই গরু কেনা হয়। রংপুর জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সিরাজুল হক জানান, এ বছর রংপুরে চাহিদার তুলনায় ৬৭ হাজারেও বেশি কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে, যা রংপুরের বাহিরে যাবে। এছাড়া এ বছর প্রাণি সম্পদ বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী খামারীরা ঘাস ও সাইলেজ খাইয়ে গরু মোটাতাজা করেছে। মেডিসিন কিংবা হরমোন খামারীরা ব্যবহার করেনি। তাই এবার কোরবানির পশুর মাংস নিরাপদ। তিনি আরও জানান, এবার ঈদেও রয়েছে অনলাইনে গরুর হাটের ব্যবস্থা। করোনার সময় এটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। এছাড়া খামারি ও ক্রেতাদের লাইভ ওয়েটের মাধ্যমে গরু কেনা-বেচায় উৎসাহিত করা হচ্ছে। এতে করে খামারি ও ক্রেতা উভয়ে লাভবান হচ্ছেন। এ বছর লাইভ ওয়েটের মাধ্যমে গরুর কেজি ৪’শ থেকে ৪২০ টাকায় বিক্রির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রংপুর জেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয় সূত্রে আরও জানা যায়, রংপুর জেলায় এ বছর ২ লাখ ৮৩ হাজার ৭৩৮টি কোরবানীর পশু মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ষাঁড় ৯৪ হাজার ৬১৩টি, বলদ ২২ হাজার ৬৫৫টি, গাভী ৩২ হজার ৮৮৬টি, মহিষ ১৪৭টি, ছাগল ১ লাখ ১৫ হাজার ৬১৭টি, ভেড়া ১৭ হাজার ৬৪৭টি রয়েছে। এ বছর রংপুর জেলায় কোরবানীর পশুর চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার ৫২৩টি।