বাঁশখালীতে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষ, নিহত ৫

বাঁশখালীতে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষ, নিহত ৫

নিউজডোর ডেস্ক ♦ চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় নির্মাণাধীন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন। শনিবার সকালে উপজেলার গণ্ডমারা ইউনিয়নের বড়ঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করলে এ  সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বাঁশখালী থানা পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, বেতন-ভাতা নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষের বিরোধ চলছিল। সকালে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে। পুলিশ তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করলে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায় । পুলিশের চারজন সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। এসময় পুলিশের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে চারজন নিহত হয়। তারা হলেন- চুয়াডাঙ্গার রনি, কিশোরগঞ্জের মো. রাহাদ, নরসিংদীর শুভ ও বাঁশখালীর মাহমুদ রেজা।

বিক্ষোভকারীদের একজন জানায়, আমাদের ১০ দফা দাবি ছিল। যেহেতু আমরা মুসলমান তবুও তারা আমাদের নামাজের সময় দেয় না। আমাদের প্রথম দাবি ছিল আমরা রোজার মাসে রোজা রাখব, ৮ ঘন্টা ডিউটি করব। ৮ ঘন্টা ডিউটি করলে সাড়ে ৪ টায় আমাদের ডিউটি শেষ হয় আমরা ইফতারের টাইম পাই। আমরা ১০ ঘন্টা ডিউটি করলে ইফতারের টাইম পাই না। ওনারা ২ ঘন্টা লাঞ্চ টাইম দেয়। আমরা বলেছি, আমাদের রোজার মাসে লাঞ্চের দরকার নাই। আপনারা লাঞ্চ টাইম কমায় দেন, আমরা ইফতারের টাইম পেয়ে যাব। ওনারা তা মানতে রাজি না, আন্দোলনের আগে। পরে আমরা আন্দোলন করি। দ্বিতীয়, আমরা জুমা’র নামাজের পর এক মিনিট দাড়ানোর সময় পাই না। সাথেসাথে ড্রেস পড়ে দৌড় দেই। আপনারা আমাদের অর্ধবেলা ডিউটি দিন। অর্ধবেলা ডিউটির পরে আমরা আর কাজে আসব না। আপনারা সম্পূর্ণ হাজিরা দিয়ে দিবেন। যা সব ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। একটা লোক এখানে কর্মরত, চাকরিজীবি তার পরিবার আছে, কোনো কারণ নাই, কোনো কিছু নাই; ওদের ইচ্ছা হচ্ছে ওরা আমাদের রাখতেছে, ওদের ইচ্ছা হচ্ছে ওরা ছাঁটাই করতেছে। তাদের মনে হয় আমরা কুকুরের বাচ্চা, মানুষের বাচ্চা না। তারা হঠাৎ করেই একজন শ্রমিককে ছাঁটাই করে দেয়। আমাদের তৃতীয় দাবি, কোনো শ্রমিককে ছাঁটাই করার এক মাস আগে তাকে অবহিত করতে হবে এবং যেদিন তাকে ছাঁটাই করা হবে সেদিন পর্যন্ত তার হাজিরা পরিশোধ করতে হবে; ওরা বলল আচ্ছা। আমাদের বাথরুমে যাওয়া যায় না ভাই বাথরুমের মধ্যে কীরা (পোকা) হাটে। ওরা আমাদের দেশে এসে ভালোভাবে থাকতেছে, থাকুক কিন্তু আমাদের বাথরুমটা ব্যবহার উপযোগী করে দেন।

চট্রগ্রাম মোডিকেল কলেজ হাসপাতালের জুররি বিভাগের চিকিৎসক ফয়সাল করিম জানান, আহতদের হাসপাতালে আনার পর আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম রায়হান বাড়ি নোয়খালী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সংঘর্ষের একপর্যায়ে গুলি চালায় পুলিশ। এতে চারজন নিহত হয়। আহত হয় কমপক্ষে ২৫ জন। হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতর আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।